কলকাতা, নিউজ ডেস্ক – রাজ্য রাজনীতিতে নতুন ধুন্ধুমার, তৃণমূলের ত্রয়ী লিপ্ত হয়েছেন বাকযুদ্ধে। আগেই তৃণমূলের সেলিব্রিটি মুখ দেব এবং তৃণমূলেরই মুখপাত্র কুনালের মধ্যে বাক্-বিতণ্ডা শুরু হয়েছিল। লোকসভা ভোটের আগে দেব তুলেছিলেন সৌজন্য-রাজনীতি্র কথা। সেই নিয়ে ঘাটালের প্রার্থীকে কড়া আক্রমণ করেছিলেন কুণাল ঘোষ। তবে ২৫ সালের পুজোর আগে উভয়ের মধ্যে শুরু হয় নতুন ঝামেলা।
প্রথম তোপ দাগেন কুনাল –
এক শনিবার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া একাউণ্টে কুনাল ঘোষ ঘাটাল হাসপাতালে ডায়ালিসিস ইউনিট উদ্বোধনের একটি ছবি পোস্ট করেন। তিনি লেখেন,
“ঘাটাল হাসপাতালে ডায়ালিসিস ইউনিটের উদ্বোধন করেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী, ১২-ই মার্চ, ২০২৪ সালে। কর্তাব্যক্তিরাও ছিলেন সেখানে। এরপর কদিন আগে ৪-ই সেপ্টেম্বর ২০২৪, সাংসদ দেব ওটাই আবার উদ্বোধন করেন। উদ্বোধক হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর নাম বদলে দেবের নাম আসে। মুখ্যমন্ত্রীর নাম পাঠানো হয় অনুপ্রেরণায়। এলাকার মানুষ তো অবাক!! সুপারস্টার বলেই এত বেনজির সাহসী কান্ডটা করা যায়। শুধু রিলের নয়, রিয়েল হিরো! অভিনন্দন দেব।”
পাল্টা তীর দাগেন অভিনেতা দেবও।
তিনি বলেন, “দিদিকে ঘাটাল হাসপাতালে ডায়ালিসিস ও সিটি স্ক্যান মেশিনের জন্য অনুরোধ করেছিলাম। দিদি মার্চ মাসে ভার্চুয়ালি ঘোষণা করেন। এক সপ্তাহ আগে মেশিনগুলো আসে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুরোধে উদ্বোধন করি। যাতে সাধারণ মানুষ পরিষেবার ব্যাপারে জানতে পারেন”। এরপরে কুণালকে আরও বলেন, “একটাই কথা বলব, আমরা যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, তাতে তথ্য যাচাই না করে সোশ্যাল মিডিয়ায় মন্তব্য না করাই ভালো।”
এরপরেও উভয় পক্ষের মধ্যে কাদা ছোঁড়াছুড়ি চলছিলই। যখন সবাই ভাবছিলেন যে এবারে হয়ত দুই নেতার মধ্যে লড়াই থামবে, ঠিক তখনই অগ্নিতে ঘৃতাহুতির কাজ করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বললেন, “বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সত্যিকারের সুপারস্টার নেই।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাংলা চলচিত্র জগতে ২০২৫ সালের পুজোয় মোট চারটি সিনেমা মুক্তি পায়। তারমধ্যে একদিকে প্রসেনজিতের ‘দেবী চৌধুরানি’, আবীর – মিমি’র ‘রক্তবীজ ২’, আর অন্যদিকে দেবের ‘রঘু ডাকাত’। ফেসবুকে কুনালবাবু অভিযোগ তোলেন যে, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ‘রঘু’কে বেশি ‘শো’ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। আর তাতেই যত সাফল্য দেবের।
প্রত্যুত্তরে দেব বলেন যে, “কাউকে ছোট করে বড় হতে পারব না। এই প্রচেষ্টা কখনও করিনি। বন্ধু হতে যোগ্যতা লাগে, শত্রু হতেও যোগ্যতা লাগে। আমার মনে হয়, এখনও কেউ সেই জায়গায় পৌঁছায়নি।”
এমন সময়ে ব্রাত্য বলেন, “যিনি সুপারস্টার, তিনি অন্যের অধীনে রাজনীতি করেন না। সত্যিকারের সুপারস্টার নিজেই দল গড়ে তোলেন। তৃণমূলে সুপারস্টার বলতে গেলে সেটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আর স্টার বলতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।” তিনি আরও বলেন, “বাংলা সিনেমায় ‘সুপারস্টার’ শব্দটাই হাস্যকর। কেউ নিজেকে সুপারস্টার বললে, সেটা দ্বিচারিতা।”
এর সাথেই ব্রাত্য বসু যোগ করেন, “দেব-কুণালের কী লড়াই হয়েছে, আমি জানি না। চারটিই বাংলা ছবি, চারটিই যদি ব্যবসা করে, খুবই ভাল। বাকি রাজনৈতিক অ্যাঙ্গেল রয়েছে, সিনেমার যাঁরা সুপারস্টার, তাঁরা কখনও অন্য দলে, অন্য নেতার অধীনে রাজনীতি করেননি।” এখন দেখার জল কতদূর গড়ায়, দেবই বা এরপরে কি করেন।
Leave a Reply