Bengali News Express

সংবাদ। সংস্কৃতি। বাঙালিয়ানা

UPI – এর পর এবার ভারতজেন: বিশ্ব A.I মঞ্চে ভারতের নতুন চমক

কলকাতা, অক্টোবর ২০২৫ — কল্পনা করুন, আপনি কম্পিউটারকে বাংলায় প্রশ্ন করলেন— “আমার ধান গাছে রোগ ধরেছে, কী করব?” আর সঙ্গে সঙ্গে বাংলাতেই পেলেন স্পষ্ট, সহজ উত্তর। ইংরেজির ভাঙা-চোরা অনুবাদ নয়, বরং আপনার মাতৃভাষায় কথা, স্বাভাবিক ছন্দে। এটাই সম্ভব করতে এসেছে ভারতজেন এআই (BharatGen AI) — ভারতের প্রথম নিজস্ব বহুভাষিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেল।

🌐 BharatGen AI আসলে কী?

ভারতজেন এআই হলো এক ধরনের লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল (LLM) — সহজ করে বললে, এটি একটি বিশাল আকারের ডিজিটাল মস্তিষ্ক, যা মানুষের ভাষা পড়তে, লিখতে এবং বুঝতে পারে।
• এটি তৈরি করছে আইআইটি বোম্বে-র নেতৃত্বাধীন একাধিক শীর্ষ গবেষণা প্রতিষ্ঠান।
• প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ৯৮৮ কোটি টাকা।
• লক্ষ্য: ভারতের ২২টিরও বেশি ভাষা, যার মধ্যে বাংলা অন্যতম, সেই ভাষাগুলিকে প্রযুক্তির মূলধারায় আনা।

🤔 কেন দরকার আর একটি এআই?

ভারতের ডিজিটাল দুনিয়া এতদিন প্রায় পুরোপুরি ইংরেজি নির্ভর ছিল। অথচ দেশের ৮৫% মানুষ নিজ নিজ মাতৃভাষাযর ব্যবহারে বেশি স্বচ্ছন্দ।
• স্বাস্থ্যসেবা: সুন্দরবনের এক গ্রামবাসী বাংলায় উপসর্গ জানালে, এআই এর সঙ্গে বাংলায় চিকিৎসা পরামর্শ নিতে পারবে।
• কৃষি: বর্ধমানের কৃষক বাংলায় প্রশ্ন করলে, ধাপে ধাপে সমাধান পাবে।
• শিক্ষা: গ্রামীণ ছাত্রছাত্রীরা বিজ্ঞানের জটিল ধারণা মাতৃভাষায় বুঝতে পারবে।
• সরকারি পরিষেবা: নাগরিকরা বাংলায় সরকারি তথ্য সহজে বুঝতে পারবেন।

এটি শুধুমাত্র একটি সুবিধা নয়, বরং ডিজিটাল জগত — যাতে প্রযুক্তি কেবলমাত্র ইংরেজি জানা মানুষদের জন্যই সীমাবদ্ধ না থাকে।

🚀 ভারতের এআই শক্তি বাড়বে কীভাবে?

আজকের দিনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (A.I) -এর দুনিয়া প্রায় পুরোপুরিভাবে আমেরিকা ও চীনের দখলে। ভারত এতদিনীই দুনিয়ার উপভোক্তা ছিল, স্রষ্টা নয়। ভারতজেন সেই চিত্র পাল্টাতে এসেছে।
• এটি হবে ভারতের নিজস্ব মডেল — বিদেশি কোম্পানি বা শক্তির উপর নির্ভরশীল নয়।
• এটি মাল্টিমডেল — শুধু লেখা নয়, ছবি এবং কথোপকথনও বুঝতে পারবে।
• যেমন ইউপিআই ডিজিটাল পেমেন্টে বিশ্বকে তাক লাগিয়েছিল, তেমনই ভারতজেন এআই ভারতের প্রযুক্তিগত শক্তিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

✍ মানবিক দিক: ভারতজেন কেন গুরুত্বপূর্ণ?

কলকাতার এক কলেজ পড়ুয়া ব্লতেই পারে, “দাদা, অবশেষে এআই শুধু ইংরেজিতে নয়, বাংলাতেও কথা বলবে। দিদিমার মতো করে। এটা আমাদের ভাষার প্রতি সম্মান।”
ভারতজেন শুধুমাত্র একটি প্রযুক্তি নয়, এটি আত্মসম্মান, পরিচয় আর ডিজিট্যাল শক্তিকে সহজলভ্য করে তোলার প্রতীক।

এটি সম্পূর্ণ করার পথে অবশ্যই অনেক সমস্যা আছে। এত ভাষায় সঠিকভাবে একটি এআই মডেলকে প্রশিক্ষণ দেওয়া যথেষ্টই কঠিন। ভুল কমানো, পক্ষপাত দুষ্টতা এড়ানো, আর এআই-কে সাধারণ মানুষের নাগালে আনা— এগুলো আগামীর বড় পরীক্ষা। তবে উদ্দেশ্য স্পষ্ট: ভারত, বিশ্বে এআই বিপ্লবে নেতৃত্ব দিতে চায়।
ভারতজেন এআই কেবলমাত্র একটি যন্ত্র নয়। এটি ভারতের প্রচেষ্টা— প্রযুক্তিকে ভারতীয় আত্মিক স্পর্শ দেওয়ার; যাতে আমাদের ভাষা, আমাদের জীবন এবং আমাদের গল্পও বিশ্বের ডিজিটাল ভবিষ্যতের অংশ হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *